, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


রাসেলস ভাইপারে কাটা হেফাজুল সুস্থ, জানালেন সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা

  • আপলোড সময় : ২৪-০৬-২০২৪ ০৭:০০:৪২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-০৬-২০২৪ ০৭:০০:৪২ অপরাহ্ন
রাসেলস ভাইপারে কাটা হেফাজুল সুস্থ, জানালেন সেই দুঃসহ স্মৃতির কথা
এবার রাজশাহীর চারঘাটের কৃষক হেফাজুল হকের গালে ছোবল দিয়েছিল রাসেলস ভাইপার সাপ। তিনি সাপটিকে মেরে ব্যাগে ভরে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে হাসপাতালে এসেছিলেন। তিন দিনের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। হেফাজুলের বাড়ি চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামে।
 
এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, রাসেলস ভাইপারে আক্রান্ত হেফাজুলের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায়। পদ্মা নদী থেকে মিনিট তিনেকের পথ। গত ৩১ মে জমিতে ঘাস কাটার সময় একটি সাপ দেখতে পেয়ে নিজেই সাপটিকে আক্রমণ করে বসেন। নিচু অবস্থা থাকায় ডান চোয়ালে ছোবল দেয় সাপটি।

তিনি সাপটিকে মেরে পলিথিন ব্যাগে করে একজনের মোটরসাইকেল যোগে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসিইউতে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।

সাপের ছোবলসহ আইসিইউতে আসতে সময় লেগেছিল তার দেড় ঘণ্টা। দ্রুত সময়ে আইসিইউতে আমরা নিয়ম মাফিক চিকিৎসা দেয়ায় তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। রোববার রাজশাহী কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে সেই ব্যক্তি পরিবারসহ দেখা করতে আসেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১২ সাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে প্রতি বছর রাসেলস ভাইপার সাপে ছোবল দেয়া অসংখ্য রোগী চিকিৎসা পেয়ে আসছে। যারা সাপের ছোবল দেয়ার ২ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের এখানে আসতে পেরেছে তাদের প্রায় সবাই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে। তবে দেরিতে চিকিৎসা পাওয়া রোগীদের প্রায় সবার ডায়ালাইসিস লেগেছে। আক্রান্ত স্থানে পচন ধরেছে।

তিনি বলেছেন, আপনার আশেপাশের সকল ওঝাদের সচেতন করুন। তারা যেন অতিদ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আতংকিত না হয়ে সঠিক তথ্য জানুন। আমরা যারা দীর্ঘদিন রাসেলস ভাইপার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে চলেছি এবং প্রাণিবিদ্যা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সঠিক তথ্য জানুন।

রাসেলস ভাইপার নিজে আক্রান্ত না হলে সে সাধারণত কাউকে কামড় দেয় না। আমাদের আইসিইউর সকল ভর্তি রোগীরা এ তথ্য দিয়েছে। সুতরাং, ভয় বা ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সাপে ছোবলের যে কোনো রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনুন। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের কৃষক ভাইদের গামবুট পায়ে মাঠে কাজ করতে উৎসাহিত করুন। রাসেলস ভাইপারকে নিজে থেকে আক্রমণ-বিরক্ত করবেন না। ওকে ওর মতো থাকতে দিন। আপনিও নিরাপদে থাকবেন বলে তিনি জানান।

সুস্থ হওয়া হেফজুল জানান, ‘আমার মনে একটা বিশ্বাস ছিল যে সর্প দংশনের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হলে সাপের বিষ লাগবে না। আমার ধারণা অ্যান্টিভেনম দিলে আমার শরীরের বিষ পানি হয়ে যাবে। তাই কোনো ওঝার কাছে না গিয়ে সাপ নিয়ে সরাসরি রাজশাহী মেডিকেল গিয়েছি।

আমার ধারণা ছিল চিকিৎসকরা সাপ দেখলে সঠিক অ্যান্টিভেনমটা দ্রুত দিতে পারবে। তাই সাপ সঙ্গে ধরে নিয়ে গেছি হাসপাতালে। রাসেলস ভাইপার যখন ছোবল দিয়েছে আমি এক সেকেন্ডের জন্য নার্ভাস হইনি। সাপে ছোবল দিয়েছে মারা যাব, আমার একবারের জন্যও মনে হয়নি।’
সর্বশেষ সংবাদ